বিশ্ববাসীর কাছে আমরা এখন বিস্ময়: চুন্নু

বিশ্ববাসীর কাছে আমরা এখন বিস্ময়: চুন্নু

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘এমন কোনো কাজ নেই যেটা আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়। আমাদের দ্বারাই সবকিছু সম্ভব সেটা আমরা দেখিয়ে দিয়েছি। এখন এমন এক নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি যেখানে মালিক, শ্রমিক সরকার একসঙ্গে কাজ করছে, সেটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এজন্য আজ আমরা পৃথিবীর কাছে বিস্ময়। পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল।’

শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০১৮ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ‘সুস্থ্য শ্রমিক, নিরাপদ জীবন; নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়ন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে এই দিবসটি পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের। তবে তিনি অসুস্থ থাকার কারণে উপস্থিত হতে পারেননি।

মুজিবুল হক বলেন, ‘উন্নত দেশ যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করে ৬০ বছরে, আর বাংলাদেশ সেই উন্নয়ন ১০ বছরে করে। ৭৫ সালের আগে এই দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি আখ্যায়িত করেছিল আমেরিকা, আর ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পৃথিবীর বিস্ময় হিসেবে আবির্ভূত হয়। বাংলাদেশে এখন পৃথিবীর কাছে রোল মডেল। ৪০ বছর আগে আমাদের দেশের মানুষ কাপড় পরতে পারত না, লেংটি পরত। সেখানে আমরা এখন বিশ্বে পোশাক রপ্তানি করি, মেড ইন বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বজুড়ে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পারি না এমন কোন কাজ নেই, আমাদের দ্বারাই সব সম্ভব। যেভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, সেটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আমাদের উৎপাদন থেমে নেই, দিন দিন উৎপাদন বাড়ছে। আমাদের মালিকপক্ষ শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতে তৎপর রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে বিজেএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘শ্রমিকরা হচ্ছে শিল্পের প্রাণ, আমরা যদি শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারি তবে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। সুস্থ শ্রমিক ছাড়া উৎপাদন ব্যাহত হবে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা যথাযথ কাজ করে যাচ্ছি, এটা আরও এগিয়ে নেব।’

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মালিক-শ্রমিকদের একটা সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অসামান্য সাফল্য এসেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল। দেশের প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি পোশাক শিল্প। এই শিল্পে পাঁচ কোটি লোকের জীবিকা নির্ভর করছে। শ্রমিকরা শিল্পের প্রাণ, এ কারণে উদ্যোক্তারা শ্রমিকের স্বাস্থ্যের বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।’

ভুল রিপোর্ট প্রকাশ করলে দেশের ক্ষতি হয়, কিন্তু কিছু এনজিও এই কাজটি করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘কিছু কিছু এনজিও ফোনে সার্ভে করে রিপোর্ট প্রকাশ করে। তারা বিদেশিদের কাছে টাকা আনতে যখন তখন রিপোর্ট দেয়। দুইশ লোকের ফোন দিয়ে, সার্ভে না করেই রিপোর্ট দেয়, যা গ্রহণযোগ্য নয়। এই সমস্ত রিপোর্ট যারা করে তাদের আমরা ধিক্কার জানাই।’

অনুষ্ঠানে বিকেএমইএ’র সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান বলেন, ‘যত বেশি আগাব, পেছন থেকে টানবে। কিন্তু আমরা এমন একটা নেতৃত্ব পেয়েছি, যাতে করে মালিক-শ্রমিক একসঙ্গে বসে সমাধান দিতে পারছি। আমাদের শ্রমিকরা আমাদের ভরসা। তাদের স্বাস্থ্য দেখার দায়িত্ব প্রত্যেক উদ্যোক্তার নৈতিক দায়িত্ব।’

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, এমপ্লোয়িজ ফেডারেশনের সভাপতি কামরান টি রহমান, আইএলও’র অফিসার্স ইনচার্জ গগন রাজ ভান্ডারী, শ্রমিকদের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment